ইরানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে রাইসির হেলিকপ্টার

- আপডেট সময় : ০৪:৩৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুন ২০২৪ ১৭৪ বার পড়া হয়েছে
আসসালামু আলাইকুম সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। নিউজমিডিয়াবিডি.কম। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আলোচিত সংবাদ ও বিশ্লেষণ মর্মান্তিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান হেলিকপ্টারে প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও আরও কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ছিলেন। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে। বিবিসি বলছে।
রবিবার উত্তর পশ্চিম ইরানে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির, আবদুল্লাহিয়ান এবং আরও কয়েকজন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় টিভিতে ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা মেহর নিয়োগ ও সংবাদ সংস্থা তাসনিম নিউজের খবরেও প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি সহ অন্যদের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। হয় কপ্টারে মোট নয় জন আরোহী ছিল বলে জানা গেছে। মেহের নিউজের খবরে বলা হয়, ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি দেশের জনগণের জন্য দায়িত্ব পালন করে।
দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। শহিদ হয়েছেন হেলিকপ্টারে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আবদুল্লাহিয়ান সহ অন্য আরোহীদের সবাই শহিদ হয়েছেন। এর আগে ইরানের এক কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। রোববার ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জোলফা এলাকার কাছে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনার পর বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। এলাকাটিতে ভারী বৃষ্টি ও ঘন কুয়াশার কারণে বেশি দূরত্বে।
কিছু দেখা যাচ্ছিল না। বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার কথা। সোমবার সকালে নিশ্চিত করেন ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রেসিডেন্ট। পরে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়, এই দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারের কোনও যাত্রীর বেঁচে থাকার চিহ্ন নেই। কর্মকর্তারা বলছেন, বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে তার মধ্যে কারও বেঁচে থাকা কঠিন। রবিবার আজারবাইজানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দুই দেশের যৌথভাবে নির্মিত একটি বাঁধ উদ্বোধন করতে যান ইব্রাহিম রাইসি। সেখানে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে রাইসি সেখান থেকে তিনটি হেলিকপ্টারের বহর নিয়ে ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের রাজধানী তাবরিজে ফিরছিলেন। পথে পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জুলফা এলাকার কাছে দুর্গম পাহাড়ে প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়। অন্য দুটি হেলিকপ্টার নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছেছে।
দুর্ঘটনার খবর আসার পরপরই দ্রুততার সাথে বড় পরিসরে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়। ইরানের পূর্ব আজারবাইজান প্রদেশের জুলফা এলাকার কাছে এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় উদ্ধারকারী দলগুলো সরাসরি সেখানে পৌঁছতে পারছিল না। এর পর ড্রোন ও হেলিকপ্টার দিয়ে আকাশ থেকে অনুসন্ধান চালানো হয়। ইরানের নিজস্ব ব্যবস্থার পাশাপাশি উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসে তুরস্ক। আনাদলু বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, তুরস্কের একটি ব্যারাক তার আকিনচি ড্রোন ও একটি হেলিকপ্টার উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে।
থাকেন যে ড্রোন থেকে তোলা ছবিতে প্রথম বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটি কে শনাক্ত করা হয়। দুর্ঘটনার পরপরই তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় উদ্ধার কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তাঁরা একটি অত্যাধুনিক আকিনচি ড্রোনও একটি কুকুর হেলিকপ্টার পাঠায়। নাইট ভিশন প্রযুক্তির সাহায্যে রাতের আঁধারে আকাশ থেকে অনুসন্ধান চালায় হেলিকপ্টার ও ড্রোনটি কয়েক ঘণ্টা তল্লাশির পর আকাশে ড্রোনের তোলা ছবি থেকে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার টিকে শনাক্ত করা হয়। এছাড়া উদ্ধারকাজের জন্য ইরানের অনুরোধে সাড়া দিয়ে তুরস্ক।
32 সদস্যের একটি দলও পাঠিয়েছে ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দলটি। রাতের আঁধারেও পাহাড়ি এলাকায় অনুসন্ধানের কাজে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এ ছাড়া দ্বিতীয় আর একটি উদ্ধারকারী দলকে প্রস্তুত রাখে তুরস্কের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতর ইরানের অনেকগুলো অনুসন্ধান দল ও দ্রুততার সাথে তল্লাশি শুরু করে। সম্ভাব্য দুর্ঘটনাস্থলে 73 টি উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে বলে ইরানের রেড ক্রিসেন্ট জানায়। তবে বৃষ্টি এবং কুয়াশার কারণে তাঁরা অগ্রসর হতে পারছিল না।
সহায়তার জন্য রাশিয়া একটি উদ্ধারকারী দল পাঠানোর ঘোষণা দেয়। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, রাশিয়ার এই দলটিতে 47 জন বিশেষজ্ঞ উদ্ধারকারী বেশ কয়েকটি যানবাহন যা উঁচু নিচু ও সমতল ভূমিতে চলতে পারে এবং একটি হেলিকপ্টার রয়েছে। এদিকে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ইরানের প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহ কয়েকজন কর্মকর্তার নিহতের ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মৃত্যুর খবর প্রচার হওয়ার পর থেকেই ইরান জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। ঘটনার পরপরই কোম শহরের ফাতিমা মাসুমেহ মাজারে বিশাল কালো রঙের ব্যানার টাঙানো হয়েছে। কম শহরটিকে ইরানের দ্বিতীয় প্রধান পবিত্র নগরী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ধর্মীয় শিক্ষার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে এই শহরে। মাশাদ শহরে ইমাম রেজার মাঝারি ও বড় আকারের কালো ব্যানার টাঙানো হয়েছে। এছাড়া দেশটির সব প্রান্তের নাগরিকরা শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমগুলো।
রবিবার হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার খবর প্রচার হওয়া মাত্রই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রেসিডেন্টের সুস্থতা কামনা করে লাখো লাখো পোস্ট দেওয়া হয়। ইব্রাহিম রাইসি ও আমির আবদুল্লাহ খানের মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও পাকিস্তানে এক দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও শোকপ্রকাশ।
বিস্তারিত জানতে কিক্ল করে